নাটিকা করবো

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - খ্রিস্ট্রধর্ম শিক্ষা - অঞ্জলি ১ | | NCTB BOOK
4
4

শিক্ষক তোমাদের একটি নাটিকার বিষয়ে অনেক অনেক কথা বলবেন। এই অনেক অনেক কথাগুলোকে অনেক অনেক আনন্দ নিয়ে গ্রহণ করো। শিক্ষক তোমাদের নাটিকার চিত্রনাট্যটি দেখাবেন যেটা এ লেখাটির শেষেও দেখতে পাবে। লক্ষ করো চিত্রনাট্যের অনেকগুলো শব্দ বা রীতি তোমার বুঝতে কষ্ট হতে পারে। শিক্ষক তোমাদের এই চিত্রনাট্যটি বুঝিয়ে দিবেন। এরপরও তোমার মনে যদি কোনো প্রশ্ন আসে তবে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করো।

 

তারপর শিক্ষক তোমাদের বিভিন্ন কাজ ভাগ করে দিবেন। তোমার উপর ন্যস্ত কাজ তোমার ধর্ম পালনের মত। তাই তোমার সর্বোত্তম প্রচেষ্টা দিয়ে তা সম্পাদন করবে। তোমার সহপাঠী যদি তোমার কাছে সাহায্য চায় তাহলে সাধ্যমত সাহায্য করো।

ভাগ করা কাজের অংশ হিসেবে তুমি কোনো চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব পেতে পারো। যদি এই দায়িত্ব না। পাও তবে মন খারাপ করবে না। এই নাটিকাটির অন্য কোনো কাজে তুমি অবশ্যই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে। এটা একটু বোঝার চেষ্টা করো তোমার এবং তোমার সহপাঠীর সম্মিলিত সাহায্য ছাড়া নাটকটির মঞ্চায়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তুমি যত নাটিকা দেখেছ বা দেখবে সব নাটিকার মঞ্চায়নে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য অনেক শিল্পী জড়িত।

যদি তুমি কোনো সবাক চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব পাও তবে তোমার চরিত্রের সংলাপগুলো আত্মস্থ করো। এখানে একটা বিষয় তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে যে তোমার সংলাপ তোমার সহশিল্পীদের সংলাপের সাথে একত্রিত হয়ে নাটিকাটিকে পূর্ণরূপ দেয়। তাই প্রস্তুতির সময় সহশিল্পীদের থেকে আলাদা না হয়ে একসাথেই অনুশীলন করো।

যদি নির্বাক চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব পাও তাহলে শিক্ষকের কাছ থেকে মঞ্চে তোমার অবস্থান, অঙ্গভঙ্গি এবং গতিবিধি বুঝে নাও। নাটিকার জন্য তোমাকে কোন কাগজে তৈরি বা বিশেষ পোষাক পরতে হতে পারে। সেটা পরতে কোনো অস্বস্তি লাগলে শিক্ষককে জানাও।

তোমার দায়িত্ব হতে পারে বিভিন্ন অভিনয় উপকরণ তৈরি, যেমন মঞ্চ প্রস্তুত, মঞ্চের সাজসজ্জা, কাগজ বা বোর্ড দিয়ে গাছপালা এবং আসবাবপত্র তৈরি, স্বর্ণদৃত গারিয়েলের ডানা তৈরি ইত্যাদি।

তোমার দায়িত্ব হতে পারে নাটকের গানটিতে অংশ নেয়া। তুমি যদি আগে গানটি শুনে থাকো তাহলে তো বেশ। শিক্ষক তোমাকে গানটির একটি video দেখাতে পারেন। নতুবা শিক্ষক নিজেও গানটি গেয়ে শোনাতে পারেন। প্রস্তুতির সময়টুকুতে এই গানটিকে ভালোভাবে রপ্ত করো। এমন হতে পারে যে দলগতভাবে গানটি গাইতে হবে, তখন তোমার সহশিল্পীদের সঙ্গে একসাথে অনুশীলন করে গানটি রপ্ত করো।

চিত্রনাট্য

প্রস্তাবনা

মঞ্চে কয়েকজন শিশু গাছপালা, সূর্য, পাখি, সহজে বানানো যায় এমন জীব এবং জড়বস্তুর ভূমিকায় দাঁড়িয়ে থাকবে। দেবদূত সাজে সজ্জিত সূত্রধার এসে মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলবে।

 

সুত্রধারঃ  নাসরত শহরে থাকতেন স্নেহময়ী একজন তরুণী। নাম তাঁর মরিয়ম (মারীয়া)। এই ধর্মপ্রাণ নারীর ঘোষেফ নামের একজনের সাথে বিয়ে হওয়ার কথা কিছুদিন পরেই।

প্রথম দৃশ্য

মরিয়ম (মারীয়া) শান্তভাবে হেঁটে যাচ্ছেন।

সুত্রধারঃ এই সেই তরুণী মরিয়ম (মারীয়া)। আজ ঈশ্বর তাঁর জন্য কী আশ্চর্য চমৎকার উপহারই না রেখেছেন।

দ্বিতীয় দৃশ্য

ঘরের ভেতরে মরিয়ম (মারীয়া) হাঁটু গেছে প্রার্থনারত। তাঁর চোখ বন্ধ, মুখমণ্ডল স্নিগ্ধ। হঠাৎ দৃশ্যপটে গাব্রিয়েল এর আবির্ভাব। চমকে গিয়ে মরিয়ম (মারীয়া) বলবেন। কয়েকজন শিশু আসবাবপত্র হিসেবে, কেউ বা জানালা, বা জানালার বাইরের গাছ হিসেবে সাজতে পারে। প্রথম দৃশ্যের এরকম সবাই এই দৃশ্যেও অংশগ্রহণ করবে।

মরিয়ম (মারীয়া) আহ! আমি বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে। আপনি কে?

গাব্রিয়েল ভয় পাবেন না, প্রিয় মরিয়ম (মারীয়া)। আমি গাব্রিয়েল। ঈশ্বর আপনাকে একটি সংবাদ দিতে আমাকে পাঠিয়েছেন।

মরিয়ম (মারীয়া) ঈশ্বরের পক্ষ থেকে সংবাদ।? আমার জন্য?

গাব্রিয়েল হ্যাঁ, মরিয়ম (মারীয়া)। ঈশ্বর আপনাকেই নির্বাচন করেছেন এবং শীঘ্রই আপনি একটি সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন যে হবে ঈশ্বরের পুত্র!

মরিয়ম (মারীয়া) হতভম্ব।

মরিয়ম (মারীয়া) কীভাবে আমি সন্তানের জন্ম দিতে পারি? আমি এখনও কুমারী।

গাব্রিয়েল প্রিয় মরিয়ম (মার্ক্সীয়া), আপনি চিন্তা করবেন না। এটা ঈশ্বরের চাওয়া। ঈশ্বরের প্রেরিত পবিত্র আত্মা আপনার উপরে নেমে আসবে এবং যিনি ভূমিষ্ঠ হবেন তিনি ঈশ্বরের পুত্র। তার নাম রাখবেন যীশু।

মরিয়ম (মারীয়া) শান্তভাবে বলবেন।

মরিয়ম (মারীয়া) যদি ঈশ্বর এটা চান, তবে তাই হোক। তাঁকে প্রনাম করি।

সবাই এপর্যায়ে সামনে এসে সমবেত কণ্ঠে গান গাইবে। যারা গাছপালা বা আসবাবপত্র সেজে আছে, তারাও সামনে এগিয়ে এসে গান গাইবে। গান হতে পারে “শোনো শোনো শোনো, শোনো দুনিয়ার শ্রান্ত ক্লান্ত ব্যথিত নর", যার কথা নিচে দেওয়া হলো।

শোনো শোনো শোনো

শোনো দুনিয়ার শ্রান্ত ক্লান্ত ব্যথিত নর

 তোমাদের মুক্তি লাগি' খুলেছে স্বর্ণদ্বার।।

 ঐ শোনো দূরে রাখালের ঘরে জাগিছে কলোচ্ছাস

 পাপের চিহ্ন মুছে গেলো আজ

 ঘুচিলো অন্ধকার (৩)।। 

ধর্মের নামে যুগ যুগ ধরি' জমিয়াছে যত পাপ 

প্রেম ও সত্যের তীব্র দাহনে

 হলো (আজ) ছারখার (২)।।

 মানুষে মানুষে জাতিতে জাতিতে 

যত রেষারেখি যত বিভেদ সা

মা মৈত্রী করুণার নীজে হলো আজ একাকার।।

 

Content added By
Promotion